হাতুড়ি ডাক্তার আমাদের জাতিয় সম্পদ! অশ্রুসিক্ত হাজার জোড়া চোখ

হাতুড়ি ডাক্তার আমাদের জাতিয় সম্পদ! অশ্রুসিক্ত হাজার জোড়া চোখ

"শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড" এই প্রবদটা পড়তে পড়তে বড় হয়েছি। ৪র্থ শ্রেণী থেকে শুরু করে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত বাংলা বিষয়ের যেন কমন একটা অনুচ্ছেদ। কিন্তু যখন ইন্টারমিডিয়েট পার করে দেশ ও জাতির কার্যক্রমের দিকে চোখ দিলাম তখনই সারা জীবনের পড়াশুনা কেমন যেন ব্যর্থ প্রতিপন্ন হলো। 

মনে হচ্ছে শিক্ষা এই জাতিতে জুতা শেলাই করা মুচির চেয়েও নিম্ন মানের অথবা একজন মেথরের ও তার চেয়ে অধিক মূল্য আছে যতটা মূল্যায়ণ করা হয় শিক্ষার্থীদের। 

সময়ে সময়ে প্রশাসন, জনগন আবার কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রুলস্ দ্বারা প্রত্যেহ ধর্ষিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন আরো একধাপ এগিয়ে। নিজেদের দলের স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে চালু করলো বিভিন্ন কোটা। এই কোটা ব্যবস্থা জাতিকে নিয়ে গেছে এক চরম হীনতর অবস্থায়। 

এই কোটা ব্যবস্থার কারণে শাহবাগের চত্বরে দেশের মেধাবী ছাত্রদের উপর পুলিশের গুলি করতে হস্ত কখনোই কম্পিত হয় নাই। 

আবার শিক্ষায় শুরু হলো ভ্যাট। খুব অবাক লাগে যখন উন্নত বিশ্ব স্কলারশীপ দিয়ে মেধাবীদের লালন পালন করে আর আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের উপরে ভ্যাট আরোপ করে। ভ্যাট বিরোধী আন্দোলন জাতির জন্য রেখে গেছে এক চরম নিদর্শন। পুলিশের বন্দুককে সামনে লাল গোলাপ দিয়ে জয় করে নিলেন শিক্ষার্থীরা। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম আন্দোলন যা কোন প্রকার গ্রেফতার বা রক্ত বিসর্জন ছাড়াই সফলতা অর্জন করলো শিক্ষার্থীরা।

অপর দিকে বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে প্রশ্নপত্র ফাঁস। আর এই পর্যায়ের প্রশাসন নির্লজ্জের মত বক্তব্য দিয়েই চলছে। যেমন ২০১৪ এর ইন্টারমিডিয়েট পরিক্ষা চলাকালে ঢাকা বোর্ডে বেশ কয়েকটি পরিক্ষা স্থগিত পর্যন্ত হয়েছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে অপর দিকে প্রশাসন বলছে "আমাদের আমলে কোন প্রশ্ন ফাঁস হয় না"। ধিক্কার জানাই এরূপ প্রশাসনের জন্য যারা প্র্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা না নিয়ে মুখে বড় বড় বুলি আওড়ায়। 

শুধু এসএসসি আর ইন্টারমিডিয়েট ই নয়, পিএসসি,, জেএসসিতেও প্রশ্ন আউট হয় আমাদরে দেশে। তা কত বড় লজ্জাজনক তা হয় তারা বুঝবেনা কারণ তারাতো তাদের লজ্জা ঢেকে রেখেছে টাকার বস্তা দ্বারা।

অত:পর, যখন শুনি মেডিকেল এক্সামের প্রশ্ন আউট হয় তখন সত্যিই নির্বাক হওয়া ছাড়া কিছুই করার থাকে না। একটা জাতির অন্যান্য সেকশন থেকে স্বাস্থ সংক্রান্ত সেকশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ আমাদের দেশে এই সেকশনেই বসছে সব অযোগ্য ব্যক্তি। যারা উচ্চ পর্যায়ে অবস্থান করার ফলে টাকার দ্বারা সিড়ি নির্মান করে আরো উচুতে উঠতে চান। 

আপনাদেরকে বলছি শুনুন- "সামান্য হাঁচি বা কাঁশি হলেও নিজের চিকিৎসা করাতে চলে যান সিঙ্গাপুর তাই এদের ডাক্তার হাতুড়ে হুক বা র‌্যান্স তাতে আপনাদের কিছু আসে যায় না। কিন্তু মনে রাখবে এদেশের বাকি ১৮ কোটি মানুষ কিন্তু ঠিকই নির্ভর করতে হয় এই হাতুড়ি ডাক্তারের উপর। আর আপনাদের জন্য ডাক্তারি নামক এই মহান পেশা কলুষিত হচ্ছে। আজ যাদেরকে ১৫লাখ টাকার বিনিময়ে ডাক্তার করে দিচ্ছেন তারা কি ডাক্তার হয়ে জনগনের সেবা করবে ভাবছেন??? 
ইম্পসিবল কখনোই না, তারা কখনোই জনগনের সেবা করবে না। তারা আপনাদের কে যে অর্থ দিয়েছে তার চক্রবৃদ্ধি হারে সুদে আসলে আদায় করে নেবে। আর এ জাতি চিরকাল বাস করবে দারিদ্রসীমার নিচে। আপনারা উপরে বসে বসে দেখবেন তাদের আর্তনাদ এবং নির্লজ্জের মত হাসবেন প্রাণ খুলে। অত:পর, যেদিন আপনার সমাপ্তি ঘটবে তখন প্রভুর কাছে আপনার কার্যে জবাব অবশ্যই দিতে হবে। মনে রাখবেন।"

আজ যারা বাবার টাকার বলে ডাক্তার হচ্ছেন তাদের বলছি শুনুন- "মানুষ ইশ্বরের পর যদি কাউকে বিশ্বাস করে সে হলো ডাক্তার। বাবার টাকার বলে ডাক্তার হচ্ছেন হন কোন সমস্যা নাই। আপনার মাথায় থাকা প্রায় ১.৩-১.৫ পাউন্ড ওজনের ব্রেনটাকে কাজে লাগান। আমি জানি আপনাদের পরিক্ষা আর দ্বিতীয় বার হবে না। কারণ আপনাদের টাকা ভাগ করা হয়ে গেছে। সুতরাং, মেধাহীন নয় মেধাকে ঘর্ষণ করে তার থেকে জ্ঞানের বর্ষণ করেন। আপনারা হলেন হাজার হাজার মেধাবী স্টুডেন্ট এর ভাঙ্গা হৃদয় আর অশ্রু জলের কারণ। আপনাদের জন্য শুভ কামনা ক্যারি অন।"

গত বছর ৬৩.৫স্কোর যারা পেয়েছিলো তাদেরকে পর্যন্ত নিয়েছিল মেবি, আমার ঠিক মনে পড়ছে না। তবে এরকমই হবে স্কোর টা। আজ যারা এই স্কোরটা অতিক্রম করতে পেরেছেন তাদেরকে সহমর্মিতা জানানোর ভাষা আমার নাই। তবে আপনারাই প্রকৃত বিজয়ী। প্রায় দুই হাজার স্টুডেন্ট ৮০-৯০ পাইছে আসলে তারা এই মার্ক পায়নি পেয়েছে তাদের টাকা। যে স্টুডেন্টগুলো ইন্টামিডিয়েটে নাকানি চুবানি খাইছে তারা মাত্র ছয় মাসে এতটা ব্রেনি হয়ে যায়নি যে ৮০-৯০ হাতের তুরিত্পেই য়ে গেছে। আমার সমবেদনা আপনাদের কষ্ট লাঘব করতে পারবে না তাই সমবেদনা জানালাম না। শুধু এতটুকুই শান্তনা দিতে চাই স্বপ্ন ভেঙ্গেছে তাই বলে স্বপ্ন বলে স্বপ্ন দেখবেন না?? নতুন করে স্বপ্ন দেখুন শিখুন। নিজেকে এমন ভাবে গড়ে তুলুন যাতে করে এই ব্যাচের ডাক্তারারই উঠতে বসতে আপনাকে স্যার বলে সম্বোধন করে।

জীবনানন্দ দাসের “কুড়ি বছর পর” পড়ার পর

জীবনানন্দ দাসের “কুড়ি বছর পর” পড়ার পর
পচিশ তিরিশ অথবা
আরও বেশী কিছু বছর পর,
হঠাৎ যদি দেখা হয়
তোমার আমার –
চিনতে কি পারবো আমরা পরষ্পরকে?
একটু কি থামবো, কুশল জানতে?
আনত নয়নে অথবা
চোখে চোখ রেখে বলবো,
“কেমন আছো?”
নাকি, অপরিচিতের মতো
হেটে চলে যাবো
পরিবার সামলানোর ভান করে,
নিজ নিজ গন্তব্যে?

ধরো, যদি দেখা হয়
সেই মানিক মিয়ায়
অথবা সেই সাউথপ্লাজায়
হাই-প্রেশার সোডিয়াম
বাতির সেই বন্যায়?
একবারের জন্যেও কি মনে পড়বে,
চতুষ্কোন কালো কালো
এলুমিনিয়ামের পোস্টে ঝুলে থাকা
সিকি শতাব্দি আগের
সেই হলুদ বাতিগুলোকে?
অদ্ভুত নতুন সেই সব বাতিগুলোকে
যার আলো এক সময়
আমাদের দেহ-মন রাঙিয়ে দিতো
অন্য অন্য রঙে!
এখনও কি সম্ভব সেরকমটা?

মনেপড়ে, আমাদের চিঠিগুলো যে ছিল অন্যরকম।
না, রোজ যে একখানা করে লিখতাম,
সেজন্য না। বরং সেগুলার বিষয়বস্তুর কারনে –
বেশ মিলে যায়,
আজকাল ফেসবুকে জানতে চাওয়া
অতি পরিচিত প্রশ্ন –
“হোয়াটস অন ইওর মাইন্ড”-এর সাথে।

আগে থেকে খুব কিছু ভেবে যে লিখতাম
তা না, না তুমি? না আমি?
আর তাই তোমার পক্ষে সম্ভব হয়েছিল
সেইসব ষোল কম এক হাজার চিঠি লিখাটা।
আমি কতগুলো লিখেছিলাম,
জানা হয়নি কখনো।
তবে কাছাকাছিই হবে বোধহয়,
হয়তো দু’চারখানা কম বা বেশী –
এখনো ফেসবুকের বা ব্লগের পাতায়
মনের খুশিতে যা ইচ্ছা তাই লিখতে বসে
ফিরে ফিরে যাই সেই সব
ইচ্ছে ঘোড়া ছুটিয়ে লিখালিখির সময়।

যদি আমাদের দেখা হয়ে যায়
ফেসবুকে, ব্লগে অথবা
অন্য কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে,
এখনো কি সেই ইচ্ছে ঘোড়ায়
ছুটতে পারবো তুমি আর আমি?
একসাথে?

আমাদের বোধহয় দেখা হবে না আর –
আর হলেও তা হবে,
এতটা অপরিচিতের মত
যে তা নিয়ে কাব্য করাই ঢের ভাল
সত্যিকারের দেখা হবার চেয়ে……

দারিদ্র্যের হার শূন্যের কোটায় আনার লক্ষ্য বিশেষ পরিকল্পনা সরকারের

দারিদ্র্যের হার শূন্যের কোটায় আনার লক্ষ্য বিশেষ পরিকল্পনা সরকারের
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার শূন্যের কোটায় নামানোসহ ১৭টি কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়ে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিএস) সামিট। ওই সামিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের ১৫০ রাষ্ট্রপ্রধান ওই সামিটে অংশগ্রহণ করবেন।এসডিএসের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে আগামী পনেরো বছরের মধ্যে দারিদ্র্যের হার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা। এ কর্মপরিকল্পনার সঙ্গে ১৯৩টি দেশ একমত হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনে বেশ সফল হয়েছে। এমডিজির বেঁধে দেয়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি দারিদ্র্যের হার কমেছে বাংলাদেশে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার হচ্ছে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ।১৯৯৭ সালে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দারিদ্র্য, শিশু, নারী, ক্ষুধার সূচক অর্জনে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়। বাংলাদেশ এসব লক্ষ্যমাত্রা সফলতার সঙ্গে অর্জন করেছে। গত পনেরো বছরে দারিদ্র্যের হার যেভাবে কমেছে তা অব্যাহত থাকলে আগামীতে আমরা এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব।দারিদ্র্য বিমোচন করতে হলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। যা বেসরকারি খাতের মাধ্যমে সম্ভব। দারিদ্র্যের হার কমানোর লক্ষ্যমাত্রা চলতি বছরে ৮ শতাংশ ছিল। সেখানে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। পর্যায়ক্রমে এ হার শূন্যের কোটায় নেমে আসুক, দেশ উন্নত বিশ্বের কাতারে সামিল হবে এটাই সবার প্রত্যাশা।