জীবনানন্দ দাসের “কুড়ি বছর পর” পড়ার পর

পচিশ তিরিশ অথবা
আরও বেশী কিছু বছর পর,
হঠাৎ যদি দেখা হয়
তোমার আমার –
চিনতে কি পারবো আমরা পরষ্পরকে?
একটু কি থামবো, কুশল জানতে?
আনত নয়নে অথবা
চোখে চোখ রেখে বলবো,
“কেমন আছো?”
নাকি, অপরিচিতের মতো
হেটে চলে যাবো
পরিবার সামলানোর ভান করে,
নিজ নিজ গন্তব্যে?

ধরো, যদি দেখা হয়
সেই মানিক মিয়ায়
অথবা সেই সাউথপ্লাজায়
হাই-প্রেশার সোডিয়াম
বাতির সেই বন্যায়?
একবারের জন্যেও কি মনে পড়বে,
চতুষ্কোন কালো কালো
এলুমিনিয়ামের পোস্টে ঝুলে থাকা
সিকি শতাব্দি আগের
সেই হলুদ বাতিগুলোকে?
অদ্ভুত নতুন সেই সব বাতিগুলোকে
যার আলো এক সময়
আমাদের দেহ-মন রাঙিয়ে দিতো
অন্য অন্য রঙে!
এখনও কি সম্ভব সেরকমটা?

মনেপড়ে, আমাদের চিঠিগুলো যে ছিল অন্যরকম।
না, রোজ যে একখানা করে লিখতাম,
সেজন্য না। বরং সেগুলার বিষয়বস্তুর কারনে –
বেশ মিলে যায়,
আজকাল ফেসবুকে জানতে চাওয়া
অতি পরিচিত প্রশ্ন –
“হোয়াটস অন ইওর মাইন্ড”-এর সাথে।

আগে থেকে খুব কিছু ভেবে যে লিখতাম
তা না, না তুমি? না আমি?
আর তাই তোমার পক্ষে সম্ভব হয়েছিল
সেইসব ষোল কম এক হাজার চিঠি লিখাটা।
আমি কতগুলো লিখেছিলাম,
জানা হয়নি কখনো।
তবে কাছাকাছিই হবে বোধহয়,
হয়তো দু’চারখানা কম বা বেশী –
এখনো ফেসবুকের বা ব্লগের পাতায়
মনের খুশিতে যা ইচ্ছা তাই লিখতে বসে
ফিরে ফিরে যাই সেই সব
ইচ্ছে ঘোড়া ছুটিয়ে লিখালিখির সময়।

যদি আমাদের দেখা হয়ে যায়
ফেসবুকে, ব্লগে অথবা
অন্য কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে,
এখনো কি সেই ইচ্ছে ঘোড়ায়
ছুটতে পারবো তুমি আর আমি?
একসাথে?

আমাদের বোধহয় দেখা হবে না আর –
আর হলেও তা হবে,
এতটা অপরিচিতের মত
যে তা নিয়ে কাব্য করাই ঢের ভাল
সত্যিকারের দেখা হবার চেয়ে……

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো আছে

পরবর্তী
« Prev Post
পূর্ববর্তী
Next Post »